সতর্কতা! সারা দেশে আসছে টানা বৃষ্টি

সতর্কতা! সারা দেশে আসছে টানা বৃষ্টি, কীভাবে প্রস্তুত হবেন আপনি?
গত কিছু দিন গরম ও কিছু কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টির পর হঠাৎ করেই বদলে যাচ্ছে দেশের আবহাওয়া। বিশ্বের প্রধান প্রধান আবহাওয়া মডেল গুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিন সারা দেশে হতে যাচ্ছে টানা ও ভারি বৃষ্টিপাত। এই আকস্মিক আবহাওয়া পরিবর্তন যেমন কিছুটা স্বস্তি এনে দিতে পারে, তেমনি সৃষ্টি করতে পারে নানা ধরণের দুর্ভোগ ও ঝুঁকি। চলুন জেনে নিই কবে থেকে শুরু হচ্ছে এই অতি বৃষ্টি।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এর তথ্য মতে,
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সকল সমুদ্র বন্দর সমূহকে ৩নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
লঘুচাপ:
- লঘুচাপটি ২৯ তারিখ রাত থেকে ৩০ তারিখ সকালে মধ্যে সুন্দরবনের উপর দিয়ে উপরে উঠে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এরপর কোলকাতা হয়ে শিলিগুড়ি ৩১ তারিখে মেঘালয় অঞ্চলে পৌঁছাবে এবং ব্যাপক বৃষ্টিপাত ঘটাবে।
- লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলীয় চর অঞ্চল গুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া ভয়ে যাওয়ার ফলে স্বাভাবিক জোয়ারের চাইতে ২-৩ ফুট বেশি উচ্চতা জোয়ার প্রবাহিত হতে পারে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর এর তথ্য মতে,
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগে ২৫ তারিখ থেকে মৌসুমী বায়ুর প্রবেশ শুরু হয়েছে। এই মৌসুমী বায়ু কে কেন্দ্র করে বর্ষার প্রবেশ ঘটে বাংলাদেশ।
বৃষ্টিপাত:
আগামী ২৯ শে মে – ৩১শে মে পর্যন্ত চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর ও ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর উপর দিয়ে ভারি বর্ষণ অতিবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান , ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, গাজীপুর,ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ,মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, শেরপুর, নেত্রকোনা, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট জেলা সমূহে অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে লঘুচাপের প্রভাবে। এই ছাড়া দেশের অন্যান্য জেলা সমূহে মাঝারি বর্ষণ হতে পারে। ৩১ তারিখ পর্যন্ত ভারি বর্ষণ থাকলেও এই বৃষ্টিপাত ৪-৫ তারিখ পর্যন্ত থাকতে পারে। কিন্তু ৩১ তারিখের পর তীব্রতা কমতে শুরু করবে।
বন্যা সতর্কতা:
লঘুচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত শুধু বাংলাদেশ নয় ভারতের ত্রিপুরা, মেঘালয়,সিকিমে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে একই সময়ে ভারী বর্ষণ হতে পারে। যার প্রভাবে উজানের পানি ও দেশের অভ্যন্তরে ভারি বর্ষণের পানি একত্রিত হয়ে কুড়িগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, ফেনী অঞ্চলের নদী তীরবর্তী নিচু এলাকা সাময়িক সময়ের জন্য প্লাবিত হতে পারে। এই অতিরিক্ত পানি ২-৩ দিনের মধ্যে নেমে যাবে। কারণ এরপর লম্বা সময় বৃষ্টি গ্যাপ থাকবে। গত বছরের মত ভয়াবহ রুপ নিবে না। ভয়ের কারণ নেই।
তাপদাহ:
এই বৃষ্টিপাত বন্ধ হলেই আবার তীব্র গরম অতিবাহিত হবে।
কৃষি পরামর্শ:
- লঘুচাপের প্রভাবে ঝড় হাওয়া ভয়ে যেতে পারে।তাই ফসলের মাচা ও ফলগাছে শক্ত খুটির ব্যবস্থা করুন।
- এই সময় বীজতলা ভালো মানের পলিনেট দিয়ে ঢেকে রাখুন।
- সংগ্ৰহ উপযোগী ফসল সংগ্রহ করে ফেলুন। যদি ৫ তারিখের পর সংগ্ৰহ উপযোগী হয় তবে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। বৃষ্টিপাত শেষে সংগ্ৰহ করতে পারবেন।
নৌযান ও জেলের জন্য পরামর্শ:
যেহেতু সমুদ্রে একটি লঘুচাপ রয়েছে।এই সময় সমুদ্র এবং উপকূলীয় নদী সমূহের পানি উত্তাল থাকবে। সতর্কতার সহিত নিরাপদে উপকূলের কাছাকাছি থেকে চলাচল করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
- লঘুচাপ কে হালকা ভাবে নিবেন না।
- অতিরিক্ত মালামাল বহন করবেন না।
- জরুরী না হলে ২ তারিখের পর নৌপথে পরিবহন করুন।