Home » ঘুম পেতে আম খান? জানুন পাকা আমের ঘুমপাড়ানি রহস্য!

ঘুম পেতে আম খান? জানুন পাকা আমের ঘুমপাড়ানি রহস্য!

আম খেলেই ঘুম পায় কেন?—বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় জানুন মিষ্টি ঘুমের রহস্য

ঋতু পরিক্রমায় এখন গ্ৰীষ্মকাল , এখন ফলের রাজা আম এর মৌসুম। দেশের সর্বত্র পাওয়া যাচ্ছে পাকা রসাল ও পুষ্টিগুণে ভরপুর আম। বাড়িতে বাড়িতে তাই পাকা আমের ঘ্রাণ। ফলটি কমবেশি সবাই পছন্দ করেন। একেক জন একেক উপায়ে আম খেয়ে থাকেন, কেউ জুস করে খেতে পছন্দ করেন, কেউবা আম সাথে ভাত এবং দুধ মিশিয়ে খেতে পছন্দ করেন কেউ কেউ আস্ত আমের স্বাদ নিতেই বেশি আগ্রহী। অন্য ফলের চাইতে আম আমাদের দেশে অধিক জনপ্রিয়। এটি এতটাই জনপ্রিয় যে আম পছন্দ করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।

আমের পুষ্টিগুণ এক নজরে:

প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে সাধারণত নিচের উপাদানগুলো থাকে (গড় পরিমাণ অনুযায়ী):

উপাদান পরিমাণ
          শক্তি         ৬০ ক্যালরি
         পানি         ৮৩.৫ গ্ৰাম
        প্রোটিন         ০.৮২ গ্ৰাম
       চর্বি (Fat)         ০.৩৮ গ্ৰাম
      কার্বোহাইড্রেট         ১৪.৯৮ গ্ৰাম
           চিনি         ১৩.৭ গ্ৰাম
    খাদ্য আঁশ (Fiber)          ১.৬ গ্ৰাম
        ভিটামিন C      ৩৬.৪ মিলিগ্ৰাম (৪০% DV)
        ভিটামিন A      ৫৪ মিলিগ্ৰাম (৬% DV)
    ফোলেট(Folate)       ৪৩ মাইক্রোগ্ৰাম
        পটাশিয়াম       ১৬৮ মিলিগ্ৰাম
        ক্যালসিয়াম        ১১ মিলিগ্ৰাম
       ম্যাগনেসিয়াম         ১০মিলিগ্ৰাম

আম খাওয়ার পর কি হালকা ঝিমুনি ভাব আসে ?কিংবা শরীর এলিয়ে ঘুম ঘুম অনুভব হয়? অথবা আম খেলেই কেন ঘুম আসে? 

আম খেলে ঘুম পায় কেন?বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জেনে নিই ।চলুন আজকে এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো

আম খাওয়ার পর কেন ঘুম ঘুম লাগে? – বিজ্ঞান যা বলছে

. মিষ্টি ঘুমের রসায়ন – ট্রিপটোফ্যান ও মেলাটোনিন

আমে থাকে ট্রিপটোফ্যান নামের এক প্রাকৃতিক অ্যামিনো অ্যাসিড, যা আমাদের মস্তিষ্কে গিয়ে রূপ নেয় সেরোটোনিনে—যা আবার ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন তৈরিতে সহায়ক। ফলাফল? মস্তিষ্ক শান্ত হয়, শরীর বিশ্রামে যেতে চায়।

২. প্রাকৃতিক চিনি আর ঘুমের টান

আমে থাকা গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ শরীরের ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। এতে ট্রিপটোফ্যান সহজে মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারে। ফলে ঘুমঘুম ভাব আসে।

. হজম আর বিশ্রাম – শরীরের যৌক্তিক প্রতিক্রিয়া

আম খাওয়ার পর হজমে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আমাদের শরীর। এই কাজে রক্ত বেশি পরিমাণে চলে যায় পাকস্থলীর দিকে। ফলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কিছুটা কমে, আর আপনি অনুভব করেন হালকা তন্দ্রা।

৪. গ্রীষ্ম, ক্লান্তি ও একফোঁটা বিশ্রাম

গরমের দিনে ঠান্ডা ঠান্ডা এক ফালি আম খেলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমে। এতে মেটাবলিজম ধীর হয়, আর শরীর নিজেই বিশ্রাম নিতে চায়।

আম শুধু স্বাদই নয়—ঘুমেরও দারুণ কারণ!

মূলত এসব কারণেই পাকা আম খেলে আমাদের ঘুম চলে আসে।

আম খাওয়ার উপকারিতা: ঘুম ছাড়াও আরও অনেক কিছু

পরামর্শ: 

  • যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত ঘুমানোর আগে আম খেতে পারেন।
  • আমে থাকা এনজাইম হজমে সহায়তা করে।
  • আমে থাকা ভিটামিন রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • আমে ফ্ল্যাভোনয়েড ও বিটা-ক্যারোটিন আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
  • আম খাওয়ার পর পর্যাপ্ত পানি পান করুন ।

সতর্কতা: আম খেলেও যেন বিপদ না ডাকে!

  • অতিরিক্ত পরিমাণে আম খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
  • খালি পেটে অতিরিক্ত আম খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে।
  • বদহজম হতে পারে ।
  • অতিরিক্ত ভক্ষণে হজম প্রক্রিয়াতে বাঁধা সৃষ্টি হতে পারে।
  • ভারী খাবারের সঙ্গে একসঙ্গে আম খাবেন না।

শেষ কথায়—সুষম আহারেই সুস্থ জীবন

কোনো খাবার ই অতিরিক্ত গ্ৰহণ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য সুখকর নয়। অতিরিক্ত খাদ্য গ্ৰহণ আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *