Home » আস-সালাম জামে মসজিদ, লক্ষ্মীপুরে নান্দনিক স্থাপত্য ও ইসলামী ঐতিহ্যের মিলনস্থল।

আস-সালাম জামে মসজিদ, লক্ষ্মীপুরে নান্দনিক স্থাপত্য ও ইসলামী ঐতিহ্যের মিলনস্থল।

সংক্ষিপ্ত পরিচয়

লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের শেখের কেল্লা এলাকায় অবস্থিত আস-সালাম জামে মসজিদ একটি আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন। এই মসজিদটি তার ব্যতিক্রমী নকশা ও পরিবেশবান্ধব বৈশিষ্ট্যের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।

স্থাপত্য ও নকশা

জানালাবিহীন নকশা: মসজিদটিতে কোনো জানালা নেই, তবে দিনের বেলায় প্রাকৃতিক আলোয় আলোকিত থাকে। ছাদের বিশেষ নকশার মাধ্যমে গরম বাতাস বের হয়ে যায় এবং ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করে, ফলে মসজিদটি সব সময় শীতল থাকে ।

ছাদের ধাপযুক্ত নকশা: ছাদটি সমতল নয়; বিভিন্ন ধাপে তৈরি, যা প্রাকৃতিক বায়ু চলাচল ও আলো প্রবেশে সহায়তা করে ।

জলাধার: মসজিদের ভেতরে চারটি জলাধার রয়েছে, যেখানে শীতল পাথর রাখা হয়েছে। এগুলো গ্রীষ্মকালে মসজিদকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে ।

নির্মাণ ও ইতিহাস

নির্মাণকাল: মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এবং ২০২১ সালের শেষের দিকে এটি মুসল্লিদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় ।

আয়তন: দোতলা এই মসজিদের মোট আয়তন ১০,৮০০ বর্গফুট ।

নকশা ও স্থপতি: মসজিদটির নকশা করেছেন আর্কি গ্রাউন্ড লিমিটেডের স্থপতি নবী নেওয়াজ খান ও তাঁর দল ।

অর্থায়ন: নির্মাণ ব্যয় বহন করেছেন রহিমা মমতাজ ও সাইফ সালাহউদ্দিন ট্রাস্টের সঙ্গে জড়িত একজন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, যিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ।

ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রম

নামাজ আদায়: মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ২,০০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। দোতলায় নারীদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে ।

জুমার নামাজ: প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজে আড়াই থেকে তিন হাজার মুসল্লির সমাগম ঘটে ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মসজিদের পাশে আস-সালাম হাফেজিয়া মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা হাফেজি ও ইংরেজি শিক্ষার সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে ।

পরিবেশ ও দর্শনীয়তা

মসজিদটি সবুজ পরিবেশে অবস্থিত, যেখানে গাছগাছালির সমারোহ রয়েছে। এর ব্যতিক্রমী স্থাপত্যশৈলী ও প্রাকৃতিক পরিবেশ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।

এই মসজিদটি আধুনিক স্থাপত্য ও পরিবেশবান্ধব নকশার এক অনন্য উদাহরণ, যা ধর্মীয় ও সামাজিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

পরিশেষে

আস-সালাম জামে মসজিদ আজ লক্ষ্মীপুর শহরের পরিচয় বহনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এর নান্দনিকতা, আধ্যাত্মিক পরিবেশ এবং ইসলামী আদর্শ প্রচারে ভূমিকা সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি শুধু একটি মসজিদ নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *