খাদ্য বলতে কি বুঝায়?
খাদ্য:
খাদ্য হলো এমন উপাদান যা জীবের দেহে পুষ্টি জোগাতে সহায়তা করে। এটি খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে এবং শক্তি উৎপাদন, দেহ গঠন ও রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খাদ্যে সাধারণত কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং পানি থাকে।
অথবা,
খাদ্য কি?
যে বস্তু আহার করলে শরীর রোগমুক্ত,কর্মক্ষম ও সুস্থ থাকা যায় তাকেই খাদ্য বলে।প্রতিটি জীবের জীবন ধারণের জন্য খাদ্যের প্রয়োজন।
খাদ্যের উৎস ২ টি।
যেমন:
- উদ্বিজ্জ
- প্রাণীজ
উদ্বিজ্জ খাদ্য:
দানা শস্য, সবুজ শাক,ফল,সবজি,চিনি,গুড়,মধু
প্রাণীজ খাদ্য:
মাছ, মাংস,দুধ,ডিম ,দুধ থেকে উৎপাদিত খাদ্য পণ্য।
✓.খাদ্যের প্রকারভেদ:
১. তাপ ও শক্তিদায়ক খাদ্য:
- প্রধান উপাদান: কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি।
- কাজ: দেহে শক্তি সরবরাহ করে
উদাহরণ: ভাত, রুটি, আলু, তেল, চিনি,চাল,গম, ভূট্টা, মিষ্টি আলু, পাউরুটি,কেক, বিস্কুট,চিনা,যব,কাউন,ঘি ,মাখন, চর্বি, নারিকেল,গুড়,মধু ।
২.শরীর গঠনমূলক ও ক্ষয় পূরণকারী খাদ্য:
- প্রধান উপাদান: প্রোটিন
- কাজ: দেহ গঠন ও ক্ষয় রোধ করে
উদাহরণ: ডিম, মাছ, ছোট মাছ, শুঁটকি,মাংস, দুধ, ডাল, সয়াবিন, চিনা বাদাম, সীমের বিচি,মটরশুটি, কাঁঠালের বিচি ।
৩. রোগ প্রতিরোধ ও দেহের সুরক্ষা মূলক খাদ্য:
- প্রধান উপাদান: ভিটামিন ও খনিজ লবণ
- কাজ: রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
উদাহরণ:
- লাল শাক, ডাঁটা শাক , পালংশাক, পুঁইশাক, কচুশাক, মিষ্টি কুমড়া,গাজর, টমেটো।
- লেবু,আমড়া, কমলা, পেয়ারা, আঙ্গুর, বেদানা,দুধ, ডিম, কলিজা,আম, কাঁঠাল পেঁপে, আনারস।
✓. খাদ্যের উপাদানসমূহ (পুষ্টি উপাদান):
- কার্বোহাইড্রেট (শর্করা) –তাপ ও শক্তি উৎপন্ন করে।
উৎস: ভাত, রুটি, আলু, চিনি।
- প্রোটিন (আমিষ) – দেহের গঠন ও ক্ষয় পূরণে সহায়তা করে।
উৎস: দুধ,ডিম, মাছ, মাংস, ডাল।
- চর্বি (ফ্যাট) – অতিরিক্ত শক্তির উৎস
উৎস: তেল, ঘি, পনির,বাদাম, মাছের তেল, নারিকেল, সয়াবিন।
- ভিটামিন – দেহের কার্যক্রম সঠিকভাবে চালাতে সাহায্য করে।
যেমন: ভিটামিন A, B, C, D, E, K
উৎস: ফলমূল, শাকসবজি, দুধ, ডিম
- খনিজ লবণ – হাড়, দাঁত গঠন ও বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজে সহায়তা করে।
যেমন: ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, আয়োডিন।
উৎস: দুধ, মাছ, শাকসবজি, ফলমূল
- পানি – শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্ত সঞ্চালন এবং বর্জ্য অপসারণে সাহায্য করে।
দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করা আবশ্যক।
- আঁশ: রোগ প্রতিরোধ ও হজমে সাহায্য করে
উৎস: ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য।
✓. খাদ্যের কাজ:
-
দেহের তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে।
-
দেহের বৃদ্ধি ও ক্ষয় পূরণ করে।
-
দেহে রোগ প্রতিরোধ উৎপন্ন করে।
✓.খাদ্যে বিদ্যমান উপাদান:
- শর্করা
- চর্বি
- আমিষ
- খাদ্যপ্রাণ
- খনিজ লবণ
- পানি
- আঁশ
✓.খাদ্য কে প্রধাণত ২ ভাগে ভাগ করা যায়।
- মূখ্য উপাদান
- গৌণ উপাদান।
✓.মূখ্য উপাদান: খাদ্যের মুখ্য (প্রধান) উপাদান বলতে বোঝানো হয় সেই পুষ্টি উপাদানগুলো যা শরীরের বৃদ্ধি, শক্তি ও সুস্থতার জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- শর্করা,তেল,আমিষ,পানি।
✓.গৌণ উপাদান: গৌণ উপাদান বলতে খাদ্যে থাকা এমন কিছু উপাদান বোঝায়, যেগুলোর পরিমাণ কম হলেও শরীরের সঠিক কার্যক্রম চালাতে এগুলোর গুরুত্ব অনেক। এগুলো সুষম খাদ্যের অংশ এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হজম প্রক্রিয়া ও কোষের সুস্থতা রক্ষায় ভূমিকা রাখে।
- খাদ্য প্রাণ, খনিজ লবণ ও আঁশ।