১৩ই জুন শুক্রবার ২০২৫: আজকের আবহাওয়া পূর্বাভাস, তাপপ্রবাহ ও বৃষ্টির সম্ভাবনা

আজ, ১৩ই জুন শুক্রবার ২০২৫ । ৩১ জৈষ্ঠ্য ঋতু পরিক্রমায় এখন গ্ৰীষ্মকাল । দেশের অল্প কিছু অঞ্চলে অস্থায়ী ভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে । এছাড়া সারাদেশের আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে এবং হালকা দমকা হাওয়াসহ বজ্র বৃষ্টি হতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণ অঞ্চল ও সিলেট বিভাগে বিকাল থেকে রাতের মধ্যে মাঝারি বৃষ্টি সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় ভারি বৃষ্টিপাত ও হতে পারে।
সার্বিক পরিস্থিতি:
বর্তমানে দেশের আবহাওয়া পরিবর্তনশীল। গ্রীষ্মকালীন উচ্চ তাপমাত্রা, জলীয়বাষ্পের আধিক্য এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাব একত্রিত হয়ে এক ধরনের অস্থির আবহাওয়া সৃষ্টি করেছে। কিছু কিছু অঞ্চলে স্বস্তির বৃষ্টি হলেও বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। এছাড়া দেশের প্রায় সব স্থানে তীব্র ভ্যাপসা গরম অব্যাহত থাকবে।
লঘুচাপ :
লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চল হয়ে উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে ।(BMD)
মৌসুমী বায়ু:
বাংলাদেশর উপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। (BMD)
তাপপ্রবাহ:
চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী সহ দেশের পশ্চিম অঞ্চল ও সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যা আজ ও অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া ঢাকা,ময়মনসিংহ, বরিশাল,চট্টগ্রাম বিভাগের উপর দিয়ে যে মৃদু তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছিলো তা আজও অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণের জেলা কক্সবাজার, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলার তাপমাত্রা কিছুটা প্রশমিত হতে পারে।
তাপ প্রবাহ থেকে বাঁচতে পরামর্শ
- বেশি করে বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
- হালকা কাপড় পড়ুন।
- হাতপাখা সঙ্গে রাখুন।
- ছাতা সঙ্গে রাখুন।
- বেশি সময় রোদে থাকবেন না।
ঈদের ছুটি শেষে কর্মক্ষেত্রে ফিরতে শিশু ও বয়স্ক মানুষের প্রতি বিশেষ নজর রাখুন। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।তাই সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে ফিরুন।
সকাল:
দেশের আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে। বৃষ্টিপাতের খুব একটা সম্ভাবনা নেই।
দুপুর:
তাপমাত্রা স্থান বেঁধে ৩০-৩৮ ডিগ্ৰী পর্যন্ত উঠতে পারে । কিন্তু বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় গত দিনের তুলনায় একটু বাড়তি অসহনীয় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হতে পারে।
রাত:
দিনের তুলনায় রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকবে, তাপমাত্রা ২৬-২৯ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে আসতে পারে। এছাড়া কিছু কিছু অঞ্চলে অস্থায়ী ভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবান রাঙামাটি ও কক্সবাজার জেলায় বিকাল থেকে রাতের মধ্যে এবং সিলেট বিভাগের সিলেট মৌলভীবাজার সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় মধ্য রাত থেকে ভোর রাতের দিকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় ভারি বর্ষণ ও হতে পারে।
অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ
বাতাসে আর্দ্রতা থাকবে বেশি, তাই গরমে অস্বস্তি অনুভব হতে পারে। বাইরে বের হলে পানির বোতল,ছাতা ও হালকা পোশাক সঙ্গে রাখার পরামর্শ।
বজ্রপাত:
বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেশি থাকায় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হতে পারে। টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।বজ্রপাতের সময় গাছের নিচে ভুলেও অবস্থান করবেন না। উচু গাছ পালাতে বজ্রপাতে ঝুঁকি বেশি থাকে।তাই বজ্রপাতের সময় নিরাপত্তা জায়গায় অবস্থান করুন। বিশেষ করে দালান অথবা ঘরবাড়ি তে।ধাতব পদার্থ থেকে দূরে থাকুন। বৃষ্টি অল্প সময়ের মধ্যে থেকে যাবে গন্তব্যে পৌঁছাতে খুব বেশি দেরি হবে না।বজ্রপাত সাধারণত কিছু সময়ের জন্য হলেও তা প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই সাবধানে থাকুন।
কৃষি পরামর্শ:
- রোদের কাজ ১৫ই জুন তারিখের আগেই সেরে ফেলুন।
- যারা চাষাবাদে ব্যস্ত আছেন, তারা বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে নিন।
- ১৭ই জুনের পর থেকে বৃষ্টি বাদল বাড়তে শুরু করবে তাই ফসলি জমির ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
- দুপুর ১২ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত সময়ে খোলা মাঠে রোদের মধ্যে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
হঠাৎ হালকা বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি আনলেও, তাপপ্রবাহ ও ভ্যাপসা গরম এখনো দেশের অনেক অঞ্চলে বিদ্যমান। বৃষ্টি পরে ভ্যাপসা গরম বেশি অনুভূত হয়। স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার দিক মাথায় রেখে দৈনন্দিন পরিকল্পনা গ্রহণ করুন।